ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর ছাত্রগণ কেন তার উস্তাদের বিরোধীতা করলেন? ফিক্বহে হানাফীতে শুধু ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর বক্তব্যের উপরই ফাতওয়া দেয়া হয়?

কিছু দিন আগে আমার একভাই আমাকে হানাফী মাযহাব সম্পর্কে তিনটি প্রশ্ন করেন এবং আমি আগেও দেখেছি যে, এই প্রশ্নগুলো নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্তি ছড়িয়ে থাকে। আমি তাকে যেভাবে উত্তর দিয়েছি সেভাবেই উত্তরটি কপি-পেষ্ট করে দিলাম।
.
প্রশ্নগুলো হল…….
.
ইমাম আবু হানাফী রঃ এর জন্ম ৮০ হিঃ এবং মৃত্যু ১৫০ হিঃ। ফিকাহ গ্রন্থ কুদরী লেখা হয় ৩৬২ হিঃ।ইমাম আবু হানাফী রঃ এর ৪ জন প্রসিদ্দ ছাত্র
১)আবু ইউসুফ রঃ.
২)মুহাম্মাদ রঃ.
৩)ইমাম যুকারা রঃ.
৪)হাসান বিন জিয়াদ রঃ. ।
.
আমার প্রশ্ন আপনার কাছে :
.
১// ১৫০ হিঃ থেকে ৩৬২ হিঃ এর সনদ অর্থাৎ রাবী গুলার নাম বলবেন?
.
২// আবু ইউসুফ রঃ ও মুহাম্মাদ রঃ, ইমাম আবু হানাফী রঃ এর ২-৩ অংশ ফতুয়ার বিরধীতা করেন কেন?
.
৩// ফিক্বহে হানাফীতে শুধু ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর বক্তব্যের উপরই ফাতওয়া দেয়া হয়?

৪// ইমাম আবু হানাফী রঃ এর কোন হাদিস গ্রন্থ এর নাম বলেন ।যেটা থেকে অনার মতআমত পাওয়া যাবে।
.
উত্তর….
.
১// আপনি বলেছেন,
ফিকাহ গ্রন্থ কুদরী লেখা হয় ৩৬২ হিঃ। …. ১৫০ হিঃ থেকে ৩৬২ হিঃ এর সনদ অর্থাৎ রাবী গুলার নাম বলবেন?
.
ভাই আপনার কুদুরীর সনদের প্রয়োজন হয়েছে কেন? আপনি কি মনে করেন, ফেকহে হানাফীতে প্রথম কুদুরী লেখা হয়েছে? এর আগে ও কিন্তু কিতাব লিখা হয়েছে।
যেমন: ইমাম আবু হানিফার ছাত্র ইমাম মোহাম্মদ নিজেও অনেক কিতাব লিখেছেন।
১। সিয়র কবীর,
২। সিয়রে সগীর,
৩। কুতুবুস্ সুন্নাহ (জাহেরুর রেওয়ায়াত)
৪। জিয়াদাত
৫। জামে কবীর
৬। জামে সগীর। সবচেয়ে বড় কথা হল ইমাম শাফী রা: ও ইমাম মোহাম্মদ থেকে হাদীস রেওয়ায়ত করেছেন।
.
২//
ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর ছাত্রগণ কেন তার উস্তাদের বিরোধীতা করলেন?
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
.
প্রথম পয়েন্টঃ
———————
.
এমন কথা যারা বলে থাকেন, তারা আসলে বিরোধিতা আর গবেষণার অর্থই বুঝেন না। এ বিষয়ে দু’টি পয়েন্ট ভাল করে বুঝতে হবে। যথা-

ইমাম আবু হানীফা রহঃ যদি শুধু নিজের মতকেই প্রতিষ্ঠা করতে চাইতেন তাহলে তার ছাত্রদের নিয়ে বোর্ড গঠন করে মাসআলার সমাধান করার কাজ হাতে নিতেন না। বরং আলবানী রহঃ এর মত ইচ্ছেমত নিজের একটি মত লিখে সেটিই জাতির সামনে উপস্থাপন করে দিতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। বরং ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা এবং কুরআন ও সুন্নাহের সঠিক উদ্দেশ্য  মুসলিম উম্মাহের সামনে আসুক তিনি সেটিই চেয়েছিলেন। তাই তিনি বোর্ড করে গবেষণা করে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত প্রদাণ করতেন। যা পরিস্কার বুঝায় আমরা একজন ব্যক্তিকে নয় বরং গবেষক বোর্ডের ফাতওয়া মানি। নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে নয়।

মূলত অন্যদের কথার উপর ফাতওয়া হলেও সেটিও ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর বক্তব্যই থাকে। কারণ তিনি যখন কোন মাসআলাকে উপস্থাপন করতেন, তখন সেই মাসআলার সম্ভাব্য হুকুম বলে দিতেন। যেমন ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত ইত্যাদি। তারপর সবার মতামত জানতে চাইতেন। তখন উপস্থিত ফক্বীহগণ তাদের নিজেদের ইলম ও সমঝের আলোকে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতেন। এর মাঝে সব ক’টি বিষয়ই ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর উপস্থাপিত হুকুম। কিন্তু তিনি নিজেও একটি হুকুমকে প্রাধান্য দিতেন। বাকিরাও তাদের মতকে বলতেন। তখন যার মতটি অধিক দলীল সমৃদ্ধ ও যৌক্তিক মনে হয় সেটির উপর সিদ্ধান্ত হতো। সেটিই ফিক্বহে হানাফী হিসেবে স্বীকৃতি পেত। আর সবাই যে মতগুলো দিত সেগুলো একেতো ইমাম আবু হানীফা রহঃ এরই একাধিক মতের একটি। আর দ্বিতীয়ত সবাই সেসব বিধানগুলো বলতেন ইমাম আবু হানীফা রহঃ এরই মূলনীতি অনুসরণ করে। তাই ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর একমতের উল্টো ফাতওয়া হওয়ায় সেটির দ্বারা ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর বিরোধিতা প্রমানিত হয় না। বরং ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর কথা এবং মূলনীতিই অনুসরণ করা হয়ে থাকে।

তাই এ অভিযোগ উত্থাপন করা আহমকী বৈ কিছু নয়।
.
দ্বিতীয় পয়েন্টঃ
———————-
.
ইমাম আবু হানীফা রহঃ থেকে বর্ণিত একাধিক বক্তব্যের মাঝে যে বক্তব্যটি তাদের কাছে দলিলে ভিত্তিতে শক্তিশালী হয়েছে সেটাকে তারা প্রাধান্য দিয়েছেন। পরবর্তিতে ওলামাগণ দেখেছেন বিরোধিতা করলেও কোন কোন স্থানে ইমাম আবু হানিফার মতামত ঠিক ছিল, আবার কোন কোন জাগায় আবু ইউছুফ বা ইমাম মোহাম্মদ রাহ: এর মতামত ঠিক ছিল। যেখানে যার মতামত টিক ছিল সেখানে তার মতামতের উপর ফতওয়া দেয়া হয়েছে।একে বলা হয় হানাফীরা অন্ধ বিশ্বস করেনা। আপনাররা কি বলেন আমরা অন্ধ বিশ্বাস করব এবং ভুল হলেও মেনে নেব। আরেকটি বিষয় অনেকেই জানে না যে, ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর ছাত্রদের মতামত মূলত ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর মতই। ইমাম আবু হানীফা রহঃ যেহেতু একজন উদ্ভাবক তথা মুজতাহিদ ছিলেন, তাই কুরআন সুন্নাহে দ্বিধাবিভক্ত বর্ণনাযুক্ত মাসায়েল বা বর্ণনাহীন মাসআলায় তিনি যখন ইজতিহাদ করে মতামত ব্যক্ত করতেন, তখন তা ছাত্রদের জানাতেন, মাঝে মাঝে এমন হত এ বিষয় কুরআন সুন্নাহে বিভক্ত বা না থাকার কারণে পরে তার মতামত পাল্টে যেত। তাই পরে তিনি আগের বক্তব্যের উল্টো বক্তব্য দিতেন, আগেরটি ভুল বলে। তখেন ছাত্রদের মাঝে যাদের কাছে আগের বক্তব্যটিই সঠিক বলে মনে হয়েছে, তারা আগেরটি নেন, আর যাদের কাছে নতুনটি সঠিক বলে মনে হয়েছে তারা সেটাইকেই গ্রহণ করেন। এ কারণে তার ছাত্রদের কোন কথাই ইমাম আবু হানীফা রহঃ এ মতামতের বাহিরে কি না? তা সুনির্দিষ্টভাবে কেউ বলতে পারবে না।
.
তৃতীয় পয়েন্টঃ
———————-
.
প্রশ্নঃ
.
আপনারা বলেন তার মাসায়াল গুলা সব সহিহ তাহলে হাদিস সঙ্কলনের যুগ আসার আগেই ইমাম আবু-হানিফার রহঃ ৩০০ (মতান্তরে ২৯৯) টি ফতোয়া বাতিল হয়েছে! বাতিল করেছেন ইমাম আবু-হানিফার রহঃ এরই শ্রেষ্ঠ ছাত্র ইমাম আবু-ইউসুফ রহঃ।
.
উত্তরঃ
.
এ তথ্য আপনাকে কে দিল? এর কি রেফারেন্স আছে? হানাফী নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে প্রমাণ করুন। কোন ফাসেক মিথ্যুক গায়রে মুকাল্লিদের কিতাব থেকে নয়। হানাফী নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে প্রমাণ দিন।
.
আরেকটি কথা জেনে রাখা উচিত যে, ইমাম আবু ইউসুফ রহঃ, ইমাম মুহাম্মদ রহঃ এর বক্তব্য মূলত ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর বক্তব্যই। তিনি ইজতিহাদ করতে গিয়ে একেক সময় একাধিক বক্তব্য দিয়েছেন। তারপর একটি মতকে দলীলের ভিত্তিতে প্রাধান্য দিয়েছেন। এর মাঝে কখনো কখনো ইমাম আবু ইউসুফ রহঃ বা ইমাম মুহাম্মদ রহঃ ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর একাধিক বক্তব্যের মাঝে একটি মতকে নিয়েছেন। আর ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর কাছে প্রাধান্য পাওয়া বক্তব্যের বিরোধীতা করেছেন দলীলের ভিত্তিতে। তাহলে যে সকল মাসআলায় ইমাম আবু ইউসুফ এবং ইমাম মুহাম্মদ রহঃ ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর কাছে প্রাধান্য পাওয়া বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন, তাও মূলত ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর বক্তব্যই। কি মূলনীতির ভিত্তিতে তারা বিরোধীতা করেছেন, তাও ফিক্বহে হানাফীর উসুলের কিতাব “উসূলে মাসায়িলিল খিলাফিয়্যাহ লিদ দাবুসী”নামক কিতাবে রয়েছে। তাই আপনি যেভাবে বলেছেন যে, ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর ফাতাওয়া বাতিল করে দিয়েছেন, তা ফিক্বহে হানাফী সম্পর্কে অজ্ঞতা-মুর্খতার কারণে বলেছেন। এর কোন ভিত্তি নেই।
.
চতুর্থ পয়েন্টঃ
——————–
.
সব মাসআলাই বিরোধিতা করেনি, তবে যে সব মাসআলাই ইমাম আবু হানিফার মতামতকে কোরআন হাদিসের বিপক্ষে পেয়েছেন সেখানে বিরাধিতা করেছেন। পরবর্তিতে ওলামাগণ দেখেছেন বিরোধিতা করলেও কোন কোন স্থানে ইমাম আবু হানিফার মতামত ঠিক ছিল, আবার কোন কোন জাগায় আবু ইউছুফ বা ইমাম মোহাম্মদ রাহ: এর মতামত ঠিক ছিল। যেখানে যার মতামত ঠিক ছিল সেখানে তার মতামতের উপর ফতওয়া দেয়া হয়েছে। আমরা হানাফীরা অন্ধ বিশ্বাস করিনা। আপনাররা কি করে বলেন আমরা অন্ধ বিশ্বাস করব এবং ভুল হলেও মেনে নেব?
.
.
৩//
ফিক্বহে হানাফীতে শুধু ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর বক্তব্যের উপরই ফাতওয়া দেয়া হয়?
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
.
আপনার জানা কথাটি সঠিক। ফিক্বহে হানাফীর অনেক মাসআলায় ইমাম আবু হানীফার সাগরীদ ইমাম আবু ইউসুফ রহ., ইমাম মুহাম্মদ রহ. এবং ইমাম যুফার বা অন্যান্যদের মতের উপরও ফাতওয়ার অনেক নজীর রয়েছে। নিম্নে কয়েকটি উপমা উপস্থাপন করা হল।

ইমাম আবু ইউসুফ রহ. এর মতের উপর ফতোয়ার উপমা

১. ইমাম আবু হানীফা রহ. এবং মুহাম্মদ রহ. এর মতে এক বিচারক যখন ফায়সার জন্য অন্য বিচারকের কাছে পত্র লিখে। তখন উক্ত পত্রে কি লিখা আছে তা পত্রবাহককে পড়ে শুনিয়ে তারপর তার সামনে সিলমহর মেরে হস্তান্তর করতে হবে। নতুবা এই পত্রটি বিচার কার্য সমাধার জন্য কার্যকরী হবেনা। পক্ষান্তরে ইমাম আবু ইউসুফ রহ. এর মতে কেবল পত্র লিখে তা বাহককে না জানিয়েও তা অন্য বিচারকের কাছে প্রেরণ করলে এ দ্বারা বিচার কার্য পরিচালনা করা যাবে। এই মতের উপরই ফতোয়া। সুতরাং এখানে ইমাম আবু হানীফা রহ. ও মুহাম্মদ রহ. এর মত আমলযোগ্য নয়। (হেদায়া-৩/১২৩-১২৪)

২. যখন কোন বোকা টাইপের স্বাক্ষ্য কাযীর মজলিসে স্বাক্ষ্য দিতে হাজির হয় তখন স্বাক্ষিকে বিচারক স্বাক্ষ্যের পদ্ধতি শিখিয়ে দিতে পারবেনা। এটা জায়েজ নয় ইমাম আবু হানীফা রহ. ও মুহাম্মদ রহ. এর মতে। কিন্তু ইমাম আবু ইউসুফ রহ. এর মতে অবুঝ ব্যক্তিকে শিখিয়ে দেয়া কেবল জায়েজই নয় উত্তমও। এই মতের উপরই ফতোয়া। (ফাতওয়ায়ে শামী-৮/৫৩)

ইমাম মুহাম্মদ রহ. এর মতের উপর ফাতওয়ার উপমা

১. মিরাস তথা ত্যাজ্য সম্পত্তি বন্টনের প্রায় সকল মাসআলায় ইমাম মুহাম্মদ রহ এর বক্তব্যের উপর ফতোয়া।

২. ইমাম আবু হানীফা রহ. এর মতে ওযুর পানি নাপাক। তাই এটি গায়ে লাগলে কাপড় নাপাক হয়ে যাবে। আর ইমাম মুহাম্মদ রহ. বলেন-অযুর পানি পাক। তবে এর দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা যাবেনা। ফাতওয়া এই মতের উপর।

ইমাম যুফার রহ. এর মতের উপর ফাতওয়ার উপমা

১. যে অসুস্থ্য ব্যক্তি দাড়িয়ে নামায পড়তে পারেনা সে ব্যক্তি যেভাবে ইচ্ছে বসে নামায পড়তে পারবে ইমাম আবু হানীফা রহ. এবং আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদ রহ. এর মতে। কিন্তু ইমাম যুফার রহ. এর মতে তাশাহুদের সুরতে বসে নামায পড়তে হবে। ফাতওয়া এই মতের উপর। (ফাতওয়ায়ে শামী-২/৫৬৫)

২. তিন ইমামের মতে বাড়ির আঙ্গিনা দেখার দ্বারা ক্রয় করার সময়ের দেখার হক সাকিত হয়ে যায়। কিন্তু ইমাম যুফার রহ. এর মতে বাড়ির আঙ্গিনা দেখার দ্বারা ভিতরাংশ দেখার হক সাকিত হয়না। এই মতে উপরই ফিক্বহে হানাফীর ফাতওয়া। (ফাতওয়ায়ে শামী-৭/১৫৮)

এরকম অসংখ উদাহরণ রয়েছে যেখানে ইমাম আবু হানীফা রহ. এর বক্তব্যের উপর ফাতওয়া নয়।

ফিক্বহে হানাফী শুধু ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর বক্তব্য নির্ভর ফিক্বহ নয়। বরং একটি গবেষক দলের গবেষণার নাম। যাদের মূল শায়েখ হলেন ইমাম আজম আবু হানীফা রহঃ।

এক বিষয়ে সহীহ ও গায়রে সহীহ হাদীস থাকলে যেমন সহীহ হাদীস রেখে গায়রে সহীহ হাদীসের উপর আমল করা জায়েজ নয়।

তেমনি ফিক্বহের মাঝে মুফতাবিহী ও গায়রে মুফতাবিহী দু’টি বক্তব্য থাকলে গায়রে মুফতাবিহী মাসায়েলের উপর ফাতওয়া দেয়া জায়েজ নয়।

বিস্তারিত জানতে দেখুন-মুফতী সালমান মানসুরপুরী দাঃ বাঃ এর লিখা “ফাতওয়া নাওয়িসী কি রাহনুমা উসূল”।
.
৪// আপনি বলেছেন,
ইমাম আবু হানাফী রঃ এর কোন হাদিস গ্রন্থ এর নাম বলেন ।যেটা থেকে অনার মতআমত পাওয়া যাবে।

আমি প্রশ্ন করি হযরত আবু বকর ওমর ওসমান আলি রা: কোন হাদিসের কিতাব লিখেছেন যেখান থেকে কোন হাদিস জাল কোন হাদিস যইফ তা জানতে পারতাম। অবশ্যয় লিখেননি। ওনারা যেকারনে লিখেন নি, সে কারনে ইমাম আবু হানিফাও লিখেন নি।
কারণ টা কি?

১। ছাহাবা যুগ যাকে হাদীসে খায়রুল কুরুন বলেছে সে যুগে হাদীস জাল বা জঈফ হয়নি, যার কারণে হাদস সংকলনের প্রয়োজন দেখা দেয়নি বরং হাদীস উস্তাদ থেকে শুনে শুনে মুখস্থ রাখা হইত। ইমাম আবু হানিফা সেই যুগেরই মানুষ ছিলেন। অর্থাত উনি সাহবা এবং তাবঈদের থেকে হাদীস শিক্ষা গ্রহণ করেচেন। পরের ‍যুগে যখন হাদিস জাল করা শুরু হয় তখন ইমাম আহমদ, ইমাম বোখারী প্রমুখ ব্যক্তি হাদীস সংকলনের কাজ শুরু করেন।

২। হাদিস শরীফে আছে : মুসলিম শরীফের রেওয়ায়াত।
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ( لا تَكْتُبُوا عَنِّي وَمَنْ كَتَبَ عَنِّي غَيْرَ الْقُرْآنِ فَلْيَمْحُهُ وَحَدِّثُوا عَنِّي وَلا حَرَجَ … ) رواه مسلم
হুযুর পাক সা: বলেন: তোমরা আমার থেকে কোরান অন্য কিচু লিখবেনা। যদি লিখে থাক তাহলে মুছে ফেল। কিন্তু আমার থেকে রেওয়ায়াত কর।
এই হাদিসে কোরান ছাড়া অন্য কিছু লিখতে নিষেধ করা হয়েছে। এর উপর ছাহাবাগণ আমল করেছেন, ইমাম আবু হানিফাও আমল করেছেন।

উনারা হাদিসের উপর আমল করাতে আপনার কোন অসুবিধা হইলে জানাবেন।

ইমাম আবু হানিফা রাহ: নিজে কোন কিতাব লিখেননি সংকলনের কাজে ব্যস্ত থাকার কারনে। তবে ওনার ছত্ররা ওনার রেওয়ায়ত সমুহ একত্রিক করেছেন।
যেমন :
1। الفقه الأكبر، برواية حماد بن أبي حنيفة
لفقه الأكبر، برواية أبي مطيع البلخي(2)
العالم والمتعلم، برواية أبي مقاتل السمرقندي(3)
رسالة الإمام أبي حنيفة إلى عثمان البتي(4)
الوصية، برواية أبي يوسف(5)

……………………………………………………………………………………………..

পাঠকরা যদি ইচ্ছা করেন তবে উক্ত প্রশ্নগুলো সাধারনত যারা করেন আপনারা তাদের সম্পর্কেও জানতে পারেন…..

2 thoughts on “ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর ছাত্রগণ কেন তার উস্তাদের বিরোধীতা করলেন? ফিক্বহে হানাফীতে শুধু ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর বক্তব্যের উপরই ফাতওয়া দেয়া হয়?

  1. apnar mobail number ta paoa jabe

    Like

Leave a comment

search previous next tag category expand menu location phone mail time cart zoom edit close